= সৌদিআরবের রাজতন্ত্র ও ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্রঃ তুলনামুলক পর্যালোচনা =
লিখেছেন লিখেছেন মোস্তফা কামাল ফয়সাল ০৩ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৪:১০:৪৯ রাত
- সম্প্রতি সৌদিআরবের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রদ্রুহীতার অভিযোগে ৪৭ ব্যক্তিকে শিরুচ্ছেদ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা/সমালোচনার ধুম চলছে।
কেও সৌদিআরবের প্রচলিত রাজতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করছে।
সৌদি নেতৃত্বকে আমেরিকার পা' চাটা গোলাম বলে আখ্যায়িত করে।
মানে, সব দায়- সৌদিআরবের (?)
- আর ইরান' নাকি পৃথিবীর একমাত্র ইসলামি রাষ্ট্র (?)
পর্যালোচনাঃ
=) ইরানে খোমেনি বিপ্লবের পরে সর্বোচ্ছ সাংবিধানিক
ক্ষমতা; সর্বোচ্ছ "ধর্মীয়নেতা"র জন্য সংরক্ষণ করে দেওয়া হয়।
পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্টের উপরে তাঁর ক্ষমতা।
তাঁর অনুমোদনবিহিন পার্লামেন্টে(মজলিশ) কোন বিল পাশ হতে
পারেনা।
ধর্মীয়নেতারতো কোন দায়বদ্ধতা নেই। আজীবন ধর্মীয়নেতার
পোস্টে থাকা; তা কোন্ শরিয়ায় অনুমোদিত?
=) শুধু আয়াতুল্লাহ খোমেনির পরিবার থেকেই আজীবন 'ধর্মীয়নেতা'
হওয়ার সাংবিধানিক সিস্টেম কোন্ শরিয়ায় অনুমোদিত?
=) ইসলামি বিপ্লবের নামে, তৎকালীন রাজতান্ত্রিক রাজা শাহ'কে
সফল বিতাড়িত করে 'খোমেনি/খামেনি' নামে আরেক রাজতন্ত্রের
জবর কায়েম।
=) ইরানের মজলিশে (পার্লামেন্ট) অমুসলিম সংখ্যালগুদের মধ্যে
খ্রিষ্টান ও ইউহুদি'দের জন্য সংরক্ষিত রিজার্ভ কোটা রয়েছে।
সেখানে নিগৃহীত 'সুন্নি মুসলিমে'দের জন্য কোটা না রাখা
কোন্ শরিয়ায় অনুমোদিত?
ইসলামি(?) রাষ্ট্রে অমুসলিমরা অধিকার পায়, আর স্বাচ্ছা সুন্নি
মুসলিমগণ অধিকার পাবেনা।
এটি খোমেনি/খামেনি মার্কা রাষ্ট্র, ইসলামি নয়।
(Mustafa Kamal Faisal)
03/01/16
বিষয়: বিবিধ
১৩৭২ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আমাদের সেরাতুল মোস্তাকিম এর পথে চালিত হবার সৌভাগ্য দিন।
শয়তানের ওয়াসা হতে মুক্ত হবার/থাকার উপায় বা সুযোগ দিন।
আমিও মনে করিনা।
আর রাজতন্ত্র ইসলামে কাংখিত শাসন ব্যাবস্থা না হলেও অবৈধ নয়। আল কুরানুল কারীম এ পরোক্ষ প্রমাণ আছে। দাউদ আলায়হিসসালাম, সুলাইমান আলায়হিসসালাম, জুলকারনাইন রাজা-ই ছিলেন, কুরানুল কারীমে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। রাজাতন্ত্র ভালো কিংবা মন্দ নির্ধারিত হবে, রাজা কি ন্যায় এর ভিত্তি শাসন পরিচালনা করেন না স্বেচ্ছাচারী হন। ইসলামে শেষোক্তটি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, হলে সে সীমা লংঘন করবেন।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলদের উপর রাজত্ব (জনগোষ্ঠীর উপর অভিভাবকত্ব) করতেন নবীগণ। তাদের মধ্যকার একজন নবী মৃত্যুবরণ করলে অপর একজন নবী তাঁর স্হলাভিষিক্ত হতেন। আমার পরে আর কোন নবী নেই বরং খলীফাগণ স্হলাভিষিক্ত হবেন ( বুখারী: অধ্যায় ৫০: আম্বিয়া কিরাম, হাদিস নং: ৪৬২১ ইফাবা)
রাজা বা বাদশাহরা নিজেদের আইন দ্বারা রাষ্ঠ্র পরিচালনা করেন কোন ঐশী আইন দ্বারা নয় এবং তারা আইনের উর্দ্ধে কিন্তু খলিফারা শুধু ঐশী আইন বাস্তবায়ন করেন এবং তারা আইনের উর্দ্ধে নন। এটাই রাজতন্ত্রের সাথে খিলাফতের পার্থক্য। আবার তর্কের খাতিরে জুলকারনাইনের সাথে সৌদি রাজতন্ত্রের তুলনাও সম্পূর্ণ ভুল মনে হয়। টয়োটা আর মার্সিডিজ বেঞ্চ এর তুলনা করা ভুল অথচ দুটিই কিন্তু গাড়ি। জুলকারনাইন ছিলেন এমন একজন ন্যায়পরায়ন ব্যক্তি তার কথাই ছিল এটা, যে ভাল কাজ করবে আমরা তাকে পুরষ্কৃত করব দ্বিগুণ, ৩ গুন কিন্তু যেই পাপ করবে আমরা তাকে শাস্তি দিব পৃথিবীতে এবং পরকালে আল্লাহ তার ফয়সালা করবেন। এমন কথা তখনই বলা যায় যখন নিজে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা যায় আর তিনি যে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন তা কোরানের আয়াতই প্রমান করে কারণ আল্লাহ নিজেই তাকে বলছেন, এই জনগোষ্ঠীকে ইচ্ছা করলে তুমি শাস্তি দিতে পারো অথবা মাফও করতে পার।
এমন ব্যাপার সৌদি রাজতন্ত্রের মাঝে আশা করাও বোকামি। তাই দুটি ভিন্ন বিষয়ের তুলনা করা চলেনা।
এই দুজন সালাফী আলিমদের বক্তব্য শুনতে পারেন।
https://youtu.be/XrbhfqoXrac
https://youtu.be/Ch9OFr04b8M
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আপনার ১ম প্যারার সাথে একমত হলেও ২য় প্যারার সাথে মোটেও একমত নই। এটা ভুল তুলনা হল। দাউদ ও সুলাইমান (আঃ)পৃথিবীর প্রথম ফিলাফত রাষ্ঠ্রব্যবস্হা কায়েম করেন। তারা যেহেতু পিতা পুত্র ছিলেন তাই একজন অন্যজনের পরে রাজা হয়েছেন, এটিও ভুল।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলদের উপর রাজত্ব (জনগোষ্ঠীর উপর অভিভাবকত্ব) করতেন নবীগণ। তাদের মধ্যকার একজন নবী মৃত্যুবরণ করলে অপর একজন নবী তাঁর স্হলাভিষিক্ত হতেন। আমার পরে আর কোন নবী নেই বরং খলীফাগণ স্হলাভিষিক্ত হবেন ( বুখারী: অধ্যায় ৫০: আম্বিয়া কিরাম, হাদিস নং: ৪৬২১ ইফাবা)
রাজা বা বাদশাহরা নিজেদের আইন দ্বারা রাষ্ঠ্র পরিচালনা করেন কোন ঐশী আইন দ্বারা নয় এবং তারা আইনের উর্দ্ধে কিন্তু খলিফারা শুধু ঐশী আইন বাস্তবায়ন করেন এবং তারা আইনের উর্দ্ধে নন। এটাই রাজতন্ত্রের সাথে খিলাফতের পার্থক্য। আবার তর্কের খাতিরে জুলকারনাইনের সাথে সৌদি রাজতন্ত্রের তুলনাও সম্পূর্ণ ভুল মনে হয়। টয়োটা আর মার্সিডিজ বেঞ্চ এর তুলনা করা ভুল অথচ দুটিই কিন্তু গাড়ি। জুলকারনাইন ছিলেন এমন একজন ন্যায়পরায়ন ব্যক্তি তার কথাই ছিল এটা, যে ভাল কাজ করবে আমরা তাকে পুরষ্কৃত করব দ্বিগুণ, ৩ গুন কিন্তু যেই পাপ করবে আমরা তাকে শাস্তি দিব পৃথিবীতে এবং পরকালে আল্লাহ তার ফয়সালা করবেন। এমন কথা তখনই বলা যায় যখন নিজে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা যায় আর তিনি যে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন তা কোরানের আয়াতই প্রমান করে কারণ আল্লাহ নিজেই তাকে বলছেন, এই জনগোষ্ঠীকে ইচ্ছা করলে তুমি শাস্তি দিতে পারো অথবা মাফও করতে পার।
এমন ব্যাপার সৌদি রাজতন্ত্রের মাঝে আশা করাও বোকামি। তাই দুটি ভিন্ন বিষয়ের তুলনা করা চলেনা।
শিয়া এবং সুন্নীর মধ্যে আকিদাগত মারাত্মক পার্থক্য রয়েছে। তাদের ভেতর জায়েদীয়াদেরকে তাওহীদপন্থী মনে করা হয়। যাইহোক ইমামত বিষয়টা তারা এমনভাবে নিয়েছে যে-তারা বিশ্বাস করে ঈমামের ভুল হয়না,ঈমাম ভুল করতে পারেনা।
রাজতন্ত্রও ইসলামের তন্ত্র নয় কিন্তু কোনো রাজা যদি রাষ্ট্রে ইসলাম বলবত রাখেন তাহলে আমরা তার শাসনের এ দিকটির প্রশংসা করতে পারি। আর রাজা ক্ষমতা উপভোগ করলে বা অপব্যাবহার করলে সেটিও ইসলাম সমর্থিত হলনা। রাজা সাধারনত একনায়কই হয় বলে দেখা গেছে,যেটা ইসলাম সমর্থন করেনা। কিন্তু এটি তুলনামূলকভাবে শিয়া তন্ত্রের চাইতে ভালো। কারন সেখানে আকিদা বিশ্বাস ও সরকার দুটোই প্রশ্নবিদ্ধ......আর তারা মুসলিম কিনা সে সিদ্ধান্ত আমার নয়। আল্লাহই ভালো জানেন। শিয়া-সুন্নী বিষয়ে আমার অভিমত হল চুপ থাকা।
ইরান সম্পর্কে এই আপনার ধারণা! আপনি মনে করেছেন- বিপ্লবের নেতা রুহুল্লাহ খোমেনী আর বর্তমান রাহবার আলী খামেনী একই পরিবারের?..
..রাহবার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি ঐশী আদেশ ও ইসলামি বিধানসমূহের সাথে সরকারী নীতিমালার সমন্বয় সাধন ও তত্বাবধান করেন। নির্বাচিত হন ১০বছরের জন্য।
রাহবারের নির্বাচনের জন্য রয়েছে বিশেষজ্ঞ পরিষদ । এই বিশেষজ্ঞ পরিষদ জনগণের সরাসরি ভোটেই নির্বাচিত। এবং রাহবার তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ও দায়িত্ব অবহেলা করলে তাকে পদচ্যুত করতে পারেন এই বিশেষজ্ঞ পরিষদ।
ইরান শিয়া-সুন্নি-কুর্দি বিভেদ করেনা। ইরানের নিঃশর্ত সংগ্রাম ডিভাইড এন্ড রুলের সওদাগর সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, আর যারা সেই রুলের ফলওয়ার তারা সাম্রাজ্যবাদেরই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে...
মন্তব্য করতে লগইন করুন